পৃথিবীর সমস্ত গাছপালাকে যদি কলম বানানো যায় এবং সমস্ত সমুদ্রের পানিকে যদি কালি তৈরী করা যায়, তাহলে কলমসমূহ ক্ষয়প্রাপ্ত হবে এবং সমস্ত কালি নিঃশেষ হয়ে যাবে। কিন্তু আল্লাহর বাণী ও হিকমত ইত্যাদি লিপিবদ্ধ করে কখনই শেষ হবে না। -- তাফসীর

"বল, ‘আমার রবের কথা লেখার জন্য সমুদ্র যদি কালি হয়ে যায় তবে সমুদ্র নিঃশেষ হয়ে যাবে আমার রবের কথা শেষ হওয়ার আগেই। যদিও এর সাহায্যার্থে অনুরূপ আরো সমুদ্র নিয়ে আসি|"

সূরা ১৮. আল-কাহফ _ আয়াত নং ১০৯ : 

قُلۡ لَّوۡ کَانَ الۡبَحۡرُ مِدَادًا لِّکَلِمٰتِ رَبِّیۡ لَنَفِدَ الۡبَحۡرُ قَبۡلَ اَنۡ تَنۡفَدَ کَلِمٰتُ رَبِّیۡ وَ لَوۡ جِئۡنَا بِمِثۡلِہٖ مَدَدًا ﴿۱۰۹ 
তাফসীরে আহসানুল-বায়ান: 

 كلمات এর অর্থঃ মহান আল্লাহর পরিব্যাপ্ত জ্ঞান, তাঁর হিকমত এবং ঐ সমস্ত দলীল-প্রমাণ যা তাঁর একতত্ত্ববাদকে প্রমাণ করে, যা মানুষের পক্ষে পূর্ণমাত্রায় জ্ঞাত হওয়া সম্ভব নয়। পৃথিবীর সমস্ত গাছপালাকে যদি কলম বানানো যায় এবং সমস্ত সমুদ্র; বরং তার সমপরিমাণ আরো সমুদ্রের পানিকে যদি কালি তৈরী করা যায়, তাহলে কলমসমূহ ক্ষয়প্রাপ্ত হবে এবং সমস্ত কালি নিঃশেষ হয়ে যাবে। কিন্তু আল্লাহর বাণী ও হিকমত ইত্যাদি লিপিবদ্ধ করে কখনই শেষ হবে না।



তাফসীরে জাকারিয়া:

 অর্থাৎ যদি সাগরের পানি আল্লাহর কালেমাসমূহ লেখার কালি হয়ে যায়, তবে আল্লাহর কালেমাসমূহ শেষ হওয়ার আগেই সাগরের পানি নিঃশেষ হয়ে যাবে। যদিও এর কালি বাড়ানোর জন্য আরও সাগর এর সাথে যুক্ত করা হয়। [আদওয়াউল বায়ান] অনুরূপ অন্য স্থানেও আল্লাহ বলেছেন। যেমন, “আর যমীনের সব গাছ যদি কলম হয় এবং সাগর, তার পরে আরো সাত সাগর কালি হিসেবে যুক্ত হয়, তবুও আল্লাহর বাণী নিঃশেষ হবে না। নিশ্চয় আল্লাহ মহা পরাক্রমশালী, হিকমতওয়ালা।”
 [সূরা লুকমান: ২৭]

এ আয়াতসমূহ প্রমাণ করছে যে, আল্লাহর কালেমাসমূহ কখনও শেষ হবে না। [আদওয়াউল বায়ান] হাদীসে এ আয়াত নাযিল হওয়ার কারণ বর্ণিত হয়েছে। তা হচ্ছে, কুরাইশ সর্দাররা ইয়াহুদীদের কাছে এসে বলল, আমাদেরকে এমন কিছু দাও যা আমরা ঐ লোকটাকে প্রশ্ন করতে পারি। তারা বলল, তাকে রূহ সম্পর্কে প্রশ্ন কর। তারা তাকে রূহ সম্পর্কে প্রশ্ন করলে নাযিল হল, (وَيَسْأَلُونَكَ عَنِ الرُّوحِ قُلِ الرُّوحُ مِنْ أَمْرِ رَبِّي وَمَا أُوتِيتُمْ مِنَ الْعِلْمِ إِلَّا قَلِيلًا)
 অর্থাৎ আর আপনাকে তারা রূহ সম্পর্কে প্রশ্ন করে। বলুন, ‘রূহ আমার রবের আদেশঘটিত এবং তোমাদেরকে জ্ঞান দেয়া হয়েছে অতি সামান্যই।” [সূরা আল-ইসরা: ৮৫] এটা শুনে ইয়াহুদীরা বলতে লাগল, আমাদেরকে তো অনেক জ্ঞান দেয়া হয়েছে। আর তা হচ্ছে তাওরাত। আর যাকে তাওরাত দেয়া হয়েছে তাকে অনেক কল্যাণ দেয়া হয়েছে। তখন এ আয়াতটি নাযিল হয়।
 [তিরমিযী: ৩১৪০]


Comments

|| Popular Posts ||

মৃত্যুর সময় যে আপসোস রয়ে যাবে! :

Moving the finger during Tashahhud _ Important Masala-Masael,

রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর ছালাত বনাম প্রচলিত ছালাত -আব্দুর রাযযাক বিন ইউসুফ

বিষয়__ সালাতের (নামাজ) গুরুত্ব ও ফযীলত |

মুহাররম ও আশূরা : করণীয় ও বর্জনীয় _ mashik at tahreek

লোক দেখানো আমলের ভয়াবহ পরিণতি_ al itisham

The Story of Adam (The First Man) _ part 1

Hadith on Shukr: Take advantage of five blessings before deprived

প্রচলিত ভুল ও কুসংস্কার | Al Itisam

সূরা হুজুরাত মানব জাতির জন্য হাদিয়া -হাফেয আব্দুল মতীন মাদানী (পর্ব-২)