বিষয়__ ইমামের পিছনে সূরা ফাতিহা পড়ার ছহীহ হাদীছ সমূহ :

পরিচ্ছেদ__ ১০/৯৫. সব সলাতেই (নামাজ) ইমাম ও মুক্তাদীর কিরাআত পড়া জরুরী, মুকীম অবস্থায় হোক বা সফরে, সশব্দে কিরাআতের সলাত হোক বা নিঃশব্দে সব সলাতেই ইমাম ও মুক্তাদীর কিরাআত পড়া জরুরী। 

৭৫৬. ‘উবাদাহ ইবনু সমিত (রাযি.) হতে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি সালাতে সূরাহ্ আল-ফাতিহা পড়ল না তার সালাত (নামাজ) হলো না।*¹ 

গ্রন্থঃ সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
অধ্যায়ঃ ১০/ আযান (كتاب الأذان)
হাদিস নম্বরঃ ৭৫৬

(আহমাদ ২২৮০৭) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৭১২, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৭২০)

*¹ আমাদের দেশের অনেক ভাইয়েরা ইমামের পেছনে সূরা আল-ফাতিহা পাঠ করেন না, এটা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর ‘আমলের বিপরীত। ইমামের পিছনে মুক্তাদীকে অবশ্যই সূরা আল-ফাতিহা পাঠ করতে হবে। মুক্তাদী ইমামের পিছনে সূরা ফাতিহা না পড়লে তার সালাত, সালাত বলে গণ্য হবে না । বুখারীর অন্য বর্ণনায় জুযউল ক্বিরাআতের মধ্যে আছে- ‘আমর্‌ বিন শুয়াইব তাঁর পিতা হতে, তাঁর পিতা তাঁর দাদা হতে বর্ণনা করে বলেছেন যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন তোমরা কি আমার পেছনে কিছু পড়ে থাক? তাঁরা বললেন, হাঁ আমরা খুব তাড়াহুড়া করে পাঠ করে থাকি। অতঃপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন তোমরা উম্মুল কুরআন অর্থাৎ সূরা ফাতিহা ব্যতিত কিছুই পড়বে না।

 (বুখারী ১ম ১০৪ পৃষ্ঠা। জুযউল কিরায়াত। মুসলিম ১৬৯, ১৭০ পৃষ্ঠা। আবূ দাউদ ১০১ পৃষ্ঠা। তিরমিযী ১ম খণ্ড ৫৭, ৭১ পৃষ্ঠা। নাসাঈ ১৪৬ পৃষ্ঠা। ইব্‌নু মাজাহ ৬১ পৃষ্ঠা। মুয়াত্তা মুহাম্মাদ ৯৫ পৃষ্ঠা। মুয়াত্তা মালিক ১০৬ পৃষ্ঠা। সহীহ ইব্‌নু খুযায়মাহ ১ম খণ্ড ২৪৭ পৃষ্ঠা। মুসলিম ইসলামিক ফাউন্ডেশন হাদীস নং ৭৫৮-৭৬৭ ও ৮২০-৮২৪। হাদীস শরীফ, মাওঃ আবদুর রহীম, ২য় খণ্ড ১৯৩-১৯৬ পৃষ্ঠা, ইসলামিয়াত বি-এ, হাদীস পর্ব ১৪৪-১৬১ পৃষ্ঠা। হিদায়াহ দিরায়াহ ১০৬ পৃষ্ঠা। মেশকাত ৭৮ পৃষ্ঠা। বুখারী আযীযুল হক ১ম হাদীস নং ৪৪১। বুখারী- আধুনিক প্রকাশনী ১ম খণ্ড হাদীস নং ৭১২। বুখারী-ইসলামিক ফাউন্ডেশন ২য় খণ্ড হাদীস নং ৭১৮। তিরমিযী- ইসলামিক ফাউন্ডেশন ১ম খণ্ড হাদীস নং ২৪৭। মিশকাত- নূর মোহাম্মদ আযমী ২য় খণ্ড ও মাদ্‌রাসা পাঠ্য হাদীস নং ৭৬৫, ৭৬৬, ৭৯৪। বুলূগুল মারাম ৮৩ পৃষ্ঠা। কিমিয়ায়ে সায়াদাত ১ম খণ্ড ২০৪ পৃষ্ঠা ।) 
*****************************************
🌠সহীহ মুসলিম (ইফাঃ), অধ্যায়ঃ ৪/ কিতাবুস স্বলাত, হাদিস নম্বরঃ ৭৬০
 
১১. প্রতি রাক'আতে সূরা ফাতিহা পড়া জরুরী, যে ফাতিহা ভালো করে জানে না এবং তা শিক্ষা করাও তার পক্ষে সম্ভব নয়, সে তার জন্য যা সহজ তাই পাঠ করবে 

৭৬০। আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা, আমর আন নাকিদ ও ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ... উবাদা ইবনুুস সামিত (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন যে, যে ফাতিহাতুল কিতাব পাঠ করবে না তার (পরিপূর্ণ) সালাত (নামায/নামাজ) হবে না।
হাদিসের মানঃ সহিহ

🌠 সহীহ মুসলিম (ইফাঃ), অধ্যায়ঃ ৪/ কিতাবুস স্বলাত, হাদিস নম্বরঃ ৭৬১
 
৭৬১। আবূত তাহির ও হারামালা ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ... উবাদা ইবনুস সামিত (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, যে উম্মুল কুরআন (সূরা ফাতিহা) পাঠ করল না তার সালাত (নামায/নামাজ) হবে না।
হাদিসের মানঃ সহিহ 

🌠 সহীহ মুসলিম (ইফাঃ), অধ্যায়ঃ ৪/ কিতাবুস স্বলাত, হাদিস নম্বরঃ ৭৬২
 
৭৬২। আল হাসান ইবনু আলী আল হুলওয়ানি (রহঃ) ... উবাদা ইবনুস সামিত (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেনঃ যে উম্মুল কুরআন পাঠ করবে না তার সালাত (নামায/নামাজ) হবে না।
হাদিসের মানঃসহিহ

🌠 সহীহ মুসলিম (ইফাঃ), অধ্যায়ঃ ৪/ কিতাবুস স্বলাত, হাদিস নম্বরঃ ৭৬৪
 
৭৬৪। ইসহাক ইবনু ইবরাহিম আল হানযালী (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যাক্তি সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করল (অথচ) তাতে উম্মুল কুরআন পাঠ করল না সে সালাত (নামায/নামাজ) হবে অসম্পূর্ণ। তিনি তিনবার এটা বললেন। অতঃপর আবূ হুরায়রা (রাঃ) কে জিজ্ঞাসা করা হল, আমরা তো ইমামের পেছনে থাকি (তখনো কি ফাতিহা পড়ব?) তিনি বললেন, তখন মনে মনে তা পড়। কারণ আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, আল্লাহ তা’আলা বলেন, আমি সালাতকে আমার ও আমার বান্দার মধ্যে অর্ধেক করে ভাগ করেছি। আর বান্দা যা চাইবে তা সে পাবে।

অতঃপর বান্দা যখন বলে, الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ (সমস্ত প্রশংসা বিশ্ব জগতসমূহের প্রতিপালক আল্লাহরই প্রাপ্য); আল্লাহ তা’আলা এর জবাবে বলেন, আমার বান্দা আমার প্রশংসা করেছে। সে যখন বলে, الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ (তিনি দয়াময়, পরম দয়ালু); আল্লাহ তাআলা বলেন, আমার বান্দা আমার গুনাবলী বর্ণনা করেছে, গুণগান করেছে। অতঃপর সে যখন বলে, مَالِكِ يَوْمِ الدِّينِ‏ (কর্মফল দিবসের মালিক), তিনি বলেন, আমার বান্দা আমার মাহাত্ম্য বর্ণনা করেছে। আর কখনো বলেছেন, আমার বান্দা (তার সব কাজ) আমার উপর সোপর্দ করেছে। সে যখন বলে, إِيَّاكَ نَعْبُدُ وَإِيَّاكَ نَسْتَعِينُ (আমরা শুধু তোমারই ইবাদত করি এবং তোমারই কাছে সাহায্য প্রার্থনা করি); তিনি বলেন- এটা আমার এবং আমার বান্দার মধ্যকার ব্যাপার। আমার বান্দা যা চাইবে তা সে পাবে। যখন সে বলে, اهْدِنَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيمَ * صِرَاطَ الَّذِينَ أَنْعَمْتَ عَلَيْهِمْ غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلاَ الضَّالِّينَ‏ (আমাদের সরল পথ প্রদর্শন কর, তাদের পথে যাদেরকে তুমি অনুগ্রহ দান করেছ, যারা ক্রোধ নিপতিত নয়, পথভ্রষ্টও নয়); তখন তিনি বলেন, এটা কেবল আমার বান্দার জন্য। আমার বান্দা যা চায় তা সে পাবে।

সুফিয়ান বলেন, আলা ইবনু আবদুর রহমান ইবনু ইয়া‘কুব (রহঃ) আমার কাছে তখন বর্ণনা করেন যখন তিনি বাড়ীতে অসুস্থ ছিলেন। আমি (শুশ্রূষার জন্য) তার বাড়িতে গিয়েছিলাম। অতঃপর এ সম্পকে তার কাছে জিজ্ঞেস করেছিলাম। 
মান সহিহ

🌠 সূনান আবু দাউদ (ইফাঃ), অধ্যায়ঃ ২/ সালাত (নামায), হাদিস নম্বরঃ ৮২১
 
১৪২. কোন ব্যাক্তি নামাযে (সুরা ফাতিহা অথবা) কিরাত পাঠ ত্যাগ করলে। 

৮২১. আল-কানাবী ............... আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেনঃ যে ব্যক্তি নামাযে সূরা ফাতিহা পাঠ করে না তার নামায ক্রটিপূর্ণ, তার নামায ক্রটিপুর্ণ, তার নামায ক্রটিপূর্ণ, অসম্পূর্ণ। রাবী বলেন, পরবর্তীকালে আমি আবূ হুরায়রা (রাঃ) কে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করি যে, আমি যখন ইমামের পিছনে থাকি, তখন সূরা ফাতিহা পাঠ করব কি? তিনি আমার বাহু চাপ দিয়ে- বলেন, হে ফারসী। তখন তুমি তোমার মনে মনে তা পাঠ করবে। কেননা আমি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি মহান আল্লাহ বলেন, আমি নামাযকে (অর্থাৎ সূরা ফাতিহাকে) আমার ও আমার বান্দার মধ্যে বিভক্ত করেছি। এর অর্ধেক আমার জন্য এবং বাকী অর্ধেক আমার বান্দার জন্য এবং আমার বান্দা আমার নিকট যা কামনা করে- তাই তাকে দেয়া হয়। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলইহে ওয়া সাল্লাম বলেনঃ তোমরা সূরা ফাতিহা পাঠ কর। আল্লাহ্ বলেন, যখন আমার বান্দা বলেঃ আল্হামদু লিল্লাহি রব্বিল আলামিন, তখন আল্লাহ্ বলেনঃ আমার বান্দা আমার প্রশংসা করেছে। অতঃপর বান্দা যখন বলেঃ আর-রাহমানির রাহীম, তখন আল্লাহ্ বলেনঃ আমার বান্দা আমার গুণগান করেছে। বান্দা যখন বলেঃ মালিকি ইয়াওমিদ্দ্বীন, তখন আল্লাহ্ বলেনঃ আমার বান্দা আমার সম্মান প্রদর্শন করেছে। অতঃপর যখন বান্দা বলেঃ ইয়াকা’নাবুদু ওয়া ইয়াকা’নাস্তাইন, তখন আল্লাহ্ বলেন, এটা আমার ও আমার বান্দার মধ্যে সীমিত এবং আমার বান্দা যা প্রার্থনা করল- তাই তাকে দেয়া হয়। অতঃপর বান্দা যখনই “ইহদিনাস সিরাতাল মুসতাকীম, সীরাতাল্লাযীনা আনআমতা আলাইহিম, গাইরিল মাগদুবি আলাইহিম ওয়ালাদ্দাল্লীন” বলে তখন আল্লাহ্ বলেন- এ সমস্তই আমার বান্দার জন্য এবং আমার বান্দা যা কিছু প্রার্থনা করেছে- তাও প্রাপ্ত হবে-(মুসলিম, তিরমিযী,ইবনু মাজা,নাসায়ী।
মান সহিহ 


🌠 সূনান আত তিরমিজী [তাহকীককৃত], অধ্যায়ঃ ২/ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে নামাযের সময়সূচী, হাদিস নম্বরঃ ২৪৭

৭১ ॥ ফাতিহাতুল কিতাব ছাড়া নামায হয় না 

২৪৭। উবাদা ইবনু সামিত (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ যে ব্যক্তি সূরা ফাতিহা পাঠ করেনি তার নামায হয়নি। —সহীহ। ইবনু মাজাহ– (৮৩৭), বুখারী ও মুসলিম।

এ অনুচ্ছেদে আবু হুরাইরা, আয়িশাহ, আনাস, আবু কাতাদা ও আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেন, উবাদার হাদীসটি হাসান সহীহ । নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সাহাবী এ হাদীস অনুযায়ী আমল করেছেন। উমার ইবনুল খাত্তাব, ‘আলী ইবনু আবী তালিব, জাবির ইবনু 'আবদুল্লাহ, ইমরান ইবনু হুসাইন ও অপরাপর সাহাবী (রাঃ) বলেছেন, সূরা ফাতিহা পাঠ করা না হলে নামায হবে না। আলী ইবনু আবী তালিব (রাঃ) বলেনঃ “যে নামাযে সূরা ফাতিহা পাঠ করা হয়নি ঐ নামায অসম্পূর্ণ” ইবনুল মুবারাক, শাফিঈ, আহমাদ ও ইসহাক এ মত গ্রহণ করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ

🌠সূনান নাসাঈ, অধ্যায়ঃ ১১/ নামাজ শুরু করা, হাদিস নম্বরঃ ৯১০
 
২৪/ নামাযে ফাতিহা পাঠ করা ওয়াজিব। 

৯১০ । মুহাম্মাদ ইবনু মানসূর (রহঃ) উবাদাহ ইবনু সামিত (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, যে ব্যক্তি সালাতে সূরা ফাতিহা পড়েনি তার সালাত হয়নি।

সহিহ, ইবনু মাজাহ হাঃ ৮৩৭, মুসলিম (ইসলামিক সেন্টার) হাঃ ৭৭১
হাদিসের মানঃ সহিহ 

🌠 বইঃ সূনান নাসাঈ, অধ্যায়ঃ ১১/ নামাজ শুরু করা, হাদিস নম্বরঃ ৯০৯

৯০৯ । কুতায়বা আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ, যে ব্যক্তি কোন সালাত আদায় করে আর তাতে সূরা ফাতিহা না পড়ে তা অসস্পূর্ণ, তা অসস্পূর্ণ, তা অসস্পূর্ণ, পূর্ণ হয় নি। তখন আমি বললাম, হে আবূ হুরায়রা! আমি অনেক সময় ইমামের পেছনে সালাত আদায় করে থাকি, তিনি আমার বাহু টান দিয়ে বললেন, হে পারসিক (ইরানী); তুমি তা মনে মনে পড়বে। কেননা আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছি যে, আল্লাহ তা’আলা বলেন, আমি আমার ও আমার বান্দার মধ্যে সালাত আধা আধি ভাগ করেছি। অতএব, এর অর্ধেক আমার জন্য আর অর্ধেক বান্দার জন্য। আর আমার বান্দার জন্য রয়েছে যা সে চায়। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা পড়। বান্দা যখন বলে, আলহামদু লিলাহি রাব্বিল আলামীন, তখন আল্লাহ তাআলা বলেন, আমার বান্দা আমার প্রশংসা করল। আর যখন বান্দা বলে, আর রহমানির রাহীম” তখন আল্লাহ তাআলা বলেন, আমার বান্দা আমার স্তুতি বর্ণনা করল। আর বান্দা যখন বলে মালিকি ইয়াওমিদ্দ্বীন- তখন আল্লাহ তা’আলা বলেন, আমার বান্দা আমার মর্যাদা বর্ণনা করল। আর বান্দা যখন বলে, ইয়্যাকা না বুদু ওয়া ইয়্যাকা নাস্তায়ীন- তখন আল্লাহ তা’আলা বলেন, এই আয়াতটি আমার ও আমার বান্দার মধ্যে। আর আমার বান্দার জন্য তা-ই রয়েছে, যা-সে চায়। বান্দা বলে, ইহুদিনাস সিরাতাল মুস্তাকীম, সিরাতাল লাযীনা আন আমতা আলাইহিম, গাইরিল মাগদুবি আলাইহিম ওয়ালাদ দ্বা-ল্লীন, (তখন আল্লাহ তায়ালা বলেন) এসবই আমার বান্দার জন্য। আর আমার বান্দার জন্য রয়েছে যা সে চায়।

সহিহ, ইবনু মাজাহ হাঃ ৮৩৮, মুসলিম (ইসলামিক সেন্টার) হাঃ ৭৭৪-৪৪৫
হাদিসের মানঃ সহিহ 

🌠 সূনান নাসাঈ, অধ্যায়ঃ ১১/ নামাজ শুরু করা, হাদিস নম্বরঃ ৯২০
 
২৯/ যে নামাযে ইমাম উচ্চস্বরে কুরআন পাঠ করে সে নামাযে ইমামের পেছনে সুরা ফাতিহা পাঠ করা। 

♦৯২০ । হিশাম ইবনু আম্মার (রহঃ) উবাদাহ ইবনু সামিত (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিয়ে এক সালাত আদায় করলেন, যাতে উচ্চস্বরে কুরআন পাঠ করা হয়। তারপর তিনি বললেন, যখন আমি উচ্চস্বরে কুরআন পড়ি তখন সূরা ফাতিহা ব্যতীত তোমাদের কেউ যেন কিছু না পড়ে।

জঈফ, আবু দাউদ হাঃ ১৪৭, তা'লিক আলা ইবনে খুজাইমাহ ১৫৮১, মিশকাত হাঃ ৮৫৪

হাদিসের মানঃ যঈফ
সনদ যদি ও যঈফ কিন্তু সুরা **ফাতিহা পড়তে সহিহ হাদিস থাকায় তা গ্রহণীয়।

🌠 সুনানে ইবনে মাজাহ, অধ্যায়ঃ ৫/ সলাত কায়িম করা ও নিয়ম-কানুন, হাদিস নম্বরঃ ৮৩৭

৫/১১. ইমামের পিছনে কিরাআত পড়া। 

১/৮৩৭। উবাদাহ ইবনুুস সামিত (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ যে ব্যাক্তি সূরা ফাতিহা পাঠ করেনি, তার সালাত হয়নি।

তাখরীজ কুতুবুত সিত্তাহ: বুখারী ৭৫৬, মুসলিম ৩৯১-৩, তিরমিযী ২৪৭, নাসায়ী ৯১০-১১, ৯২০; আবূ দাঊদ ৮২২-২৪, আহমাদ ২২১৬৯, ২২১৮৬, ২২২৩৭, ২২২৪০; দারিমী ১২৪২। তাহক্বীক্ব আলবানী: সহীহ। তাখরীজ আলবানী: ইরওয়াহ ৩০২, সহীহ আবী দাউদ ৭৮০। হাদিসের মানঃ সহিহ 

🌠সুনানে ইবনে মাজাহ, অধ্যায়ঃ ৫/ সলাত কায়িম করা ও নিয়ম-কানুন, হাদিস নম্বরঃ ৮৪০
 
৫/১১. ইমামের পিছনে কিরাআত পড়া। 

৪/৮৪০। আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছিঃ যে কোন সালাতে সূরাহ ফাতিহা না পড়া হলে তা অসম্পূর্ণ।

তাখরীজ কুতুবুত সিত্তাহ: আহমাদ ২৪৫৭৫, ২৫৮২৪। তাহক্বীক্ব আলবানী: হাসান সহীহ। হাদিসের মানঃ হাসান 

🌠 সুনানে ইবনে মাজাহ, অধ্যায়ঃ ৫/ সলাত কায়িম করা ও নিয়ম-কানুন, হাদিস নম্বরঃ ৮৪১
 
৫/১১. ইমামের পিছনে কিরাআত পড়া। 

৫/৮৪১। আবদুল্লাহ বিন আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ যে কোন সালাতে সূরাহ ফাতিহা না পড়লে তা অসম্পূর্ণ তা অসম্পূর্ণ।

তাহক্বীক্ব আলবানী: হাসান সহীহ। হাদিসের মানঃ হাসান ।

🌠 সুনানে ইবনে মাজাহ, অধ্যায়ঃ ৫/ সলাত কায়িম করা ও নিয়ম-কানুন, হাদিস নম্বরঃ ৮৪২
 
৫/১১. ইমামের পিছনে কিরাআত পড়া। 

৬/৮৪২। আবূ দারদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যাক্তি তাকে জিজ্ঞেস করলো, ইমামের কিরাআত পড়ার সাথে সাথে আমিও কি কিরাআত পড়বো? তিনি বলেন, এক ব্যাক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে জিজ্ঞেস করলো, প্রত্যেক সালাতেই কি কিরাআত আছে? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ হ্যাঁ। উপস্থিত লোকেদের মধ্যে একজন বললো, এটি বাধ্যতামূলক হয়ে গেলো।

তাখরীজ কুতুবুত সিত্তাহ: নাসায়ী ৯২৩, আহমাদ ২৬৯৮২। তাহক্বীক্ব আলবানী: হাসান। উক্ত হাদিসের রাবী মুআবিয়াহ বিন ইয়াহইয়া সম্পর্কে আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নন। আবু হাতিম আর-রাযী ও আবু দাউদ আস-সাজিসতানী ও ইমাম নাসাঈ বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। 
হাদিসের মানঃ হাসান।

🌠 সুনানে ইবনে মাজাহ, অধ্যায়ঃ ৫/ সলাত কায়িম করা ও নিয়ম-কানুন, হাদিস নম্বরঃ ৮৪৩
 
৫/১১. ইমামের পিছনে কিরাআত পড়া। 

৭/৮৪৩। জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা যোহর ও আসর সালাতের প্রথম দু রাকআতে ইমামের পিছনে সূরাহ ফাতিহা ও অন্য সূরাহ এবং শেষ দু সালাতে কেবল সূরাহ ফাতিহা পড়তাম।

তাহক্বীক্ব আলবানী: সহীহ। তাখরীজ আলবানী: ইরওয়াহ ৫০৬। হাদিসের মানঃ সহিহ

🌠সুনানে ইবনে মাজাহ, অধ্যায়ঃ ৫/ সলাত কায়িম করা ও নিয়ম-কানুন, হাদিস নম্বরঃ ৮৩৮
 
৫/১১. ইমামের পিছনে কিরাআত পড়া। 

২/৮৩৮। আবূস সাইব (রহঃ) আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) কে বলতে শুনেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ যে ব্যাক্তি কোন সালাত পড়লো এবং তাতে উম্মুল কুরআন (সূরাহ ফাতিহা) পড়েনি তার সালাত অসম্পূর্ণ। আবূস সাইব (রহঃ) বলেন, আমি বললাম, হে আবূ হুরাইরাহ! আমি কখনো কখনো ইমামের সাথে সালাত পড়ি। তিনি আমার বাহুতে খোঁচা দিয়ে বলেন, হে ফারিসী! তুমি তা মনে মনে পড়ো।

তাখরীজ কুতুবুত সিত্তাহ: মুসলিম ৩৯৫, তিরমিযী ২৯৫৩, নাসায়ী ৯০৯, আবূ দাঊদ ৮১৯-২১, আহমাদ ৭২৪৯, ৭৭৭৭, ৭৮৪১, ৯২৪৫, ৯৫৮৪, ৯৬১৬, ৯৮৪২, ৯৯৪৬; মুওয়াত্ত্বা মালিক ১৮৯। তাহক্বীক্ব আলবানী: সহীহ। তাখরীজ আলবানী: সহীহ আবী দাউদ ৭৭৯। হাদিসের মানঃ সহিহ

🌠অনেকে বলে ইমামের পিছনে সুরা **ফাতিহা পড়া যাবে না, অথচ রাসুল সাঃ সুরা ফাতিহা পড়তে বলেছেন, ইমামের পিছনে সুরা **ফাতিহার পরে যে সুরা পড়া হয় তা পড়তে নিষেধ করেছেন, রাসুল সাঃ এ হাদিসে বলেন, 

🌠সূনান নাসাঈ, অধ্যায়ঃ ১১/ নামাজ শুরু করা, হাদিস নম্বরঃ ৯১৭
 
২৭/ যে নামাযে কিরাআতে চুপে চুপে পাঠ করা হয় সে নামাযে ইমামের পশ্চাতে কিরাআত ত্যাগ করা। 

৯১৭ । মুহাম্মাদ ইবনু মুছান্না (রহঃ) ইমরান ইবনু হুসায়ন (রাঃ) থেকে বর্নিত তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যোহরের সালাত আদায় করলেন। এক ব্যক্তি তার পেছনে “সাব্বি হিসমা রাব্বিকাল আলা” পাঠ করল। তিনি যখন সালাত শেয করলেন, তখন বললেন, “সাব্বি হিসমা রাব্বিকাল আলা” কে পাঠ করল? এক ব্যক্তি বলল, আমি পড়েছি। তখন তিনি বললেন, আমি জানতাম, তোমাদের কেউ কিরাআতে আমার সাথে ঝামেলা সৃষ্টি করবে।

সহিহ, আবু দাউদ হাঃ ৭৮৪, মুসলিম (ইসলামিক সেন্টার) হাঃ ৭৮২-৭৮৩

হাদিসের মানঃ সহিহ 

🌠সূনান নাসাঈ, অধ্যায়ঃ ১১/ নামাজ শুরু করা, হাদিস নম্বরঃ ৯১৮
 
২৭/ যে নামাযে কিরাআতে চুপে চুপে পাঠ করা হয় সে নামাযে ইমামের পশ্চাতে কিরাআত ত্যাগ করা। 

৯১৮ । কুতায়বা (রহঃ) ইমরান ইবনু হুসায়ন (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার যোহর অথবা আসরের সালাত আদায় করলেন। আর এক ব্যক্তি তাঁর পেছনে কুরআন পড়ছিল। তিনি সালাত শেষ করে বললেন, তোমাদের মধ্যে কে “সাবিবহিসমা রাব্বিকাল আ’লা”- পাঠ করল? উপস্থিত লোকদের মধ্যে এক ব্যক্তি বলল, আমি পড়েছি। আর আমি তা দ্বারা কল্যাণ ব্যতিত কিছু কামনা করিনি। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমি বুঝলাম তোমাদের মাঝে কেউ কিরাআতে আমার সাথে ঝামেলা সৃষ্টি করেছ।
সহিহ, প্রাগুক্ত
হাদিসের মানঃ সহিহ 
*****************************************


(1) عَنْ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ قَالَ لَا صَلَاةَ لِمَنْ لَمْ يَقْرَأْ بِفَاتِحَةِ الْكِتَابِ.

(১) উবাদা বিন ছামেত (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি সূরা ফাতিহা পাঠ করে না তার ছালাত হয় না’।[1] ইমাম বুখারী উক্ত হাদীছ উল্লেখ করার পূর্বে নিম্নোক্ত অনুচ্ছেদ নির্ধারণ করেন, بَابُ وُجُوْبِ الْقِرَاءَةِ لِلْإِمَامِ وَالْمَأْمُوْمِ فِى الصَّلَوَاتِ كُلِّهَا فِي الْحَضَرِ وَالسَّفَرِ وَمَا يُجْهَرُ فِيْهَا وَمَا يُخَافَتُ ‘প্রত্যেক ছালাতে ইমাম-মুক্তাদী উভয়ের জন্য ক্বিরা‘আত (সূরা ফাতিহা) পড়া ওয়াজিব। মুক্বীম অবস্থায় হোক বা সফর অবস্থায় হোক, জেহরী ছালাতে হোক বা সের্রী ছালাতে হোক’।[2]

উল্লেখ্য যে, উক্ত হাদীছ পেশ করে ব্যাখ্যা দেয়া হয় যে, এই হাদীছ একাকী ছালাতের জন্য। অথচ উক্ত দাবী সঠিক নয়; বরং বিভ্রান্তিকর। দাবী যদি সঠিক হয়, তাহলে জামা‘আতে ছালাত আদায়ের সময় যোহর ও আছর ছালাতে এবং মাগরিবের শেষ রাক‘আতে ও এশার ছালাতের শেষ দুই রাক‘আতেও কি সূরা ফাতিহা পড়া যাবে না? কারণ মুক্তাদী তো একাকী নয়, ইমামের সাথে আছে? অথচ যোহর ও আছরের ছালাতে মুক্তাদীরা সূরা ফাতিহা সহ অন্য সূরাও পাঠ করতে পারবে মর্মে ছহীহ হাদীছ বর্ণিত হয়েছে।[3]

তাছাড়া একাকী বলতে মৌলিক কোন ছালাত আছে কি? ফরয ছালাত তো জামা‘আতেই পড়তে হবে। এমনকি কোথাও দুইজন থাকলেও জামা‘আত করে ছালাত আদায় করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।[4] কখনো কখনো ফরয ছালাত একাকী পড়া হয়। তাহলে ঐ হাদীছটি কি শুধু কখনো কখনো একাকী ছালাতের জন্য প্রযোজ্য? না শুধু নফল ছালাতের জন্য? আর নফল ছালাত তো কেউ না পড়লেও পারে। তাহলে উক্ত হাদীছের ব্যাপারে এ ধরনের দাবী কিভাবে যথার্থ হতে পারে? এ জন্য ইমাম বুখারীসহ অন্যান্য প্রায় সকল মুহাদ্দিছ জামা‘আতে পড়ার পক্ষেই উক্ত হাদীছ পেশ করেছেন।[5] অতএব উক্ত হাদীছ জামা‘আত ও একাকী উভয় অবস্থার সাথেই সম্পৃক্ত।

(2) عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِىِّ قَالَ مَنْ صَلَّى صَلاَةً لَمْ يَقْرَأْ فِيهَا بِأُمِّ الْقُرْآنِ فَهْىَ خِدَاجٌ ثَلاَثًا غَيْرُ تَمَامٍ فَقِيْلَ لأَبِىْ هُرَيْرَةَ إِنَّا نَكُوْنُ وَرَاءَ الإِمَامِ فَقَالَ اقْرَأْ بِهَا فِىْ نَفْسِكَ فَإِنِّىْ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ يَقُوْلُ قَالَ اللهُ تَعَالىَ قَسَمْتُ الصَّلَاةَ بَيْنِيْ وَبَيْنَ عَبْدِيْ نِصْفَيْنِ وَلِعَبدِىْ مَا سَأَلَ فَإِذَا قَالَ الْعَبْدُ اَلْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ قَالَ اللهُ حَمِدَنِىْ عَبْدِىْ وَإِذَا قَالَ الرَّحْمَنِ الرَّحِيْمِ قَالَ اللهُ تَعَالى أََثْنَى عَلَىَّ عَبْدِىْ وَإِذَا قَالَ مَالِكِ يَوْمِ الدِّيْنِ قَالَ مَجَّدَنِىْ عَبْدِىْ وَإِذَا قَالَ إِيَّاكَ نَعْبُدُ وَإِيَّاكَ نَسْتَعِيْنُ قَالَ هَذَا بَيْنِيْ وَبَيْنَ عَبْدِيْ وَلِعَبْدِىْ مَا سَأَلَ فَإِذَا قَالَ اِهْدِنَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيْمَ صِرَاطَ الَّذِيْنَ أَنْعَمْتَ عَلَيْهِمْ غَيْرِ الْمَغْضُوْبِ عَلَيْهِمْ وَلَا الضَّالِّيْنَ قَالَ هذَا لِعَبْدِىْ وَلِعَبْدِىْ مَا سَأَلَ.

(২) আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি কোন ছালাত আদায় করল অথচ সূরা ফাতিহা পাঠ করল না, তার ছালাত অসম্পূর্ণ রয়ে গেল। এ কথাটি তিনি তিনবার বলেন। তখন আবু হুরায়রাকে জিজ্ঞেস করা হল, আমরা যখন ইমামের পিছনে থাকি? উত্তরে তিনি বললেন, তুমি চুপে চুপে পড়। কেননা আমি রাসূল (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি, আল্লাহ তা‘আলা বলেন, আমি ছালাতকে আমার মাঝে ও আমার বান্দার মাঝে দুই ভাগে ভাগ করেছি। আমার বান্দার জন্য সেই অংশ যা সে চাইবে। বান্দা যখন বলে, ‘আল-হামদুলিল্লা-হি রাবিবল ‘আলামীন’ (যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি জগৎ সমূহের প্রতিপালক)। তখন আল্লাহ বলেন, আমার বান্দা আমার প্রশংসা করল। বান্দা যখন বলে, ‘আর-রহমা-নির রহীম’ (যিনি করুণাময়, পরম দয়ালু)। তখন আল্লাহ বলেন, বান্দা আমার গুণগান করল। বান্দা যখন বলে, ‘মা-লিকি ইয়াওমিদ্দ্বীন’ (যিনি বিচার দিবসের মালিক) তখন আল্লাহ বলেন, আমার বান্দা আমাকে সম্মান প্রদর্শন করল। বান্দা যখন বলে, ইয়্যা-কানা‘বুদু ওয়া ইয়্যা-কানাসতাঈন (আমরা কেবল আপনারই ইবাদত করি এবং আপনার নিকটই সাহায্য প্রার্থনা করি)। তখন আল্লাহ বলেন, এটা আমার ও আমার বান্দার মাঝে আধাআধি ভাগ (অর্থাৎ ইবাদত আমার জন্য আর প্রার্থনা বান্দার জন্য) এবং আমার বান্দার জন্য সেই অংশ রয়েছে, যা সে চাইবে। যখন বান্দা বলে, ‘ইহদিনাছ ছিরাত্বাল মুস্তাক্বীম, ছিরা-ত্বল্লাযীনা আন‘আমতা ‘আলায়হিম, গয়রিল মাগযূবি ‘আলায়হিম ওয়ালায য-ল্লীন (আপনি আমাদের সরল পথ প্রদর্শন করুন। তাদের পথ যাদের উপর আপনি রহম করেছেন। তাদের পথ নয় যারা অভিশপ্ত এবং পথভ্রষ্ট)। তখন আল্লাহ বলেন, আমার বান্দা যা চেয়েছে তা তার জন্য’।[6] (আমীন)।

উক্ত হাদীছ থেকে প্রমাণিত হয় যে, ইমাম-মুক্তাদী সকলেই সূরা ফাতিহা পাঠ করবে। সূরা ফাতিহা শুধু ইমামের জন্য নয়। কারণ আল্লাহর বান্দা শুধু ইমাম নন, মুক্তাদীও আল্লাহর বান্দা। আর আবু হুরায়রাহ (রাঃ) সেটা বুঝানোর জন্যই উক্ত হাদীছ পেশ করেছেন। অতএব ইমামের পিছনে মুক্তাদীও সূরা ফাতিহা পাঠ করবে।

(3) عَن رِفَاعَةَ بْنِ رَافعٍ قَالَ جَاءَ رَجُلٌ فَصَلَّى فِي الْمَسْجِدِ ثُمَّ جَاءَ فَسَلَّمَ عَلَى النَّبِيِّ فَقَالَ النَّبِيُّ أَعِدْ صَلَاتَكَ فَإِنَّكَ لَمْ تُصَلِّ فَقَالَ عَلِّمْنِىْ يَا رَسُوْلَ اللهِ كَيْفَ أُصَلِّي؟ قَالَ إِذَا تَوَجَّهَتَ إِلَى الْقِبْلَةِ فَكَبِّرْ ثُمَّ اقْرَأْ بِأُمِّ الْقُرْآنِ وَمَا شَاءَ اللهُ أَنْ تَقْرَأَ..

(৩) রিফা‘আ বিন রাফে‘ (রাঃ) বলেন, জনৈক ব্যক্তি মসজিদে আসল এবং ছালাত আদায় করল। অতঃপর রাসূল (ছাঃ)-কে সালাম দিল। তিনি তাকে বললেন, তুমি ছালাত ফিরিয়ে পড়। নিশ্চয় তুমি ছালাত আদায় করনি। তখন লোকটি বলল, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! আমাকে ছালাত শিক্ষা দিন। তিনি বললেন, যখন তুমি ক্বিবলামুখী হবে তখন তাকবীর দিবে। অতঃপর সূরা ফাতিহা পড়বে এবং আল্লাহর ইচ্ছায় আরো কিছু অংশ পাঠ করবে..। [7]

[1]. ছহীহ বুখারী হা/৭৫৬, ১/১০৪ পৃঃ, (ইফাবা হা/৭২০, ২/১০৯ পৃঃ), ‘আযান’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-৯৫; ছহীহ মুসলিম ১/১৬৯ পৃঃ, মুসলিম হা/৯০০, ৯০১, ৯০২, ৯০৪, ৯০৬, ৯০৭ (ইফাবা হা/৭৫৮, ৭৫৯, ৭৬০, ৭৬২); মিশকাত পৃঃ ৭৮, হা/৮২২ ও ৮২৩; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৭৬৫, ৭৬৬, ২/২৭২ পৃঃ, ‘ছালাতে ক্বিরআত পাঠ করা’ অনুচ্ছেদ।

[2]. ছহীহ বুখারী ১/১০৪ পৃঃ, হা/৭৫৬-এর অনুচ্ছেদ দ্রঃ।

[3]. ইবনু মাজাহ হা/৮৪৩, পৃঃ ৬১; সনদ ছহীহ, আলবানী, ইরওয়াউল গালীল হা/৫০৬।

[4]. বুখারী হা/৬৫৮, ১/৯০ পৃঃ, (ইফাবা হা/৬২৫, ২/৬২ পৃঃ); মুসলিম হা/১৫৭০, ১/২৩৬ পৃঃ, (ইফাবা হা/১৪০৭); তিরমিযী হা/২০৫; মিশকাত হা/৬৮২; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৬৩১, ২/২০৭ পৃঃ, ‘আযানের সংশ্লিষ্ট’ অনুচ্ছেদ।

[5]. ইবনু মাজাহ হা/৮৩৭।

[6]. ছহীহ মুসলিম হা/৯০৪, ১/১৬৯-৭০ পৃঃ, (ইফাবা হা/৭৬২), ‘ছালাত’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-১১; মিশকাত হা/৮২৩, পৃঃ ৭৮-৭৯; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৭৬৬, মিশকাত ২/২৭২ পৃঃ।

[7]. আবুদাঊদ হা/৮৫৯, ১/১২৫ পৃঃ; মিশকাত হা/৮০৪, পৃঃ ৭৬; ছহীহ ইবনে হিববান হা/১৭৮৪, সনদ ছহীহ।
#collected
www.atowar-rahman-salafi.blogspot.com

Comments