প্রশ্ন: ঈদুল ফিতরের তাকবীর কখন শুরু হবে এবং কখন শেষ হবে? _ ফতোয়া

উত্তর

আলহামদু লিল্লাহ।.

রমযান মাসের সমাপ্তি লগ্নে আল্লাহ্‌ তাআলা বান্দার জন্য তাকবীর দেওয়ার বিধান দিয়েছেন। তিনি বলেন: "তিনি চান তোমরা সংখ্যা পূরণ কর এবং তিনি যে তোমাদেরকে নির্দেশনা দিয়েছেন সে জন্য তাকবীর উচ্চারণ কর (আল্লাহর বড়ত্ব ঘোষণা কর) এবং যাতে তোমরা শোকর কর।"[সূরা বাক্বারা, আয়াত: ১৮৫] তাকবীর উচ্চারণ কর মানে: তোমাদের অন্তর দিয়ে ও মুখ দিয়ে আল্লাহ্‌র মহত্ব ঘোষণা কর। সেটি তাকবীরের শব্দাবলীর মাধ্যমে হতে পারে। যেমন আপনি এভাবে বলতে পারেন:

الله أكبر ، الله أكبر ، لا إله إلا الله ، والله أكبر ، الله أكبر ، ولله الحمد 

(উচ্চারণ: আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার। লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, ওয়াল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, ওয়া লিল্লাহিল হামদ)(অনুবাদ: আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান। আল্লাহ্‌ ছাড়া সত্য কোন উপাস্য নেই। আল্লাহ্‌ মহান, আল্লাহ্‌ মহান। সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ্‌র জন্য।)

কিংবা আপনি তিনবার করে এভাবেও বলতে পারেন:

الله أكبر، الله أكبر، الله أكبر، لا إله إلا الله . والله أكبر ، الله أكبر ، ولله الحمد

(উচ্চারণ: আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার। লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, ওয়াল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, ওয়া লিল্লাহিল হামদ)(অনুবাদ: আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান। আল্লাহ্‌ ছাড়া সত্য কোন উপাস্য নেই। আল্লাহ্‌ মহান, আল্লাহ্‌ মহান। সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ্‌র জন্য।)

সবই জায়েয।

জমহুর আলেমের নিকট এই তাকবীর দেওয়া সুন্নত। এটি নর-নারী উভয়ের জন্য সুন্নত; মসজিদসমূহে, বাড়ী-ঘরে এবং হাটে-বাজারে।

পুরুষেরা উচ্চস্বরে তাকবীর দিবেন। আর নারীরা চুপে চুপে তাকবীর দিবেন। কেননা নারীরম তার কণ্ঠস্বর নীচু রাখার আদেশ দেওয়া হয়েছে। এজন্য নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: "যখন তোমাদের নামাযে সন্দেহপূর্ণ কিছু ঘটবে তখন পুরুষেরা তাসবিহ পড়বে। আর নারীরা তালি দিবে"।

তাই নারীরা তাকবীর বলবে গোপনে। পুরুষেরা বলবে উচ্চস্বরে।

তাকবীর বলা শুরু হবে ঈদের রাতের সূর্য ডোবা থেকে; যদি সূর্য ডোবার আগেই জানা যায় যে, শাওয়াল মাস প্রবেশ করেছে; সেটা এভাবে যে, মানুষ যদি মাসের ত্রিশদিন পূর্ণ করে। কিংবা শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা যাওয়ার মাধ্যমে। আর তাকবীর দেওয়া শেষ হবে ঈদের নামায আদায় করার মাধ্যমে। অর্থাৎ মানুষ যখন ঈদের নামায শুরু করবে তখন তাকবীর দেওয়ার সময় শেষ।[মাজমুউ ফাতাওয়া ইবনে উছাইমীন (১৬/২৬৯-২৭২)]

ইমাম শাফেয়ি "আল-উম্ম" গ্রন্থে বলেন:

আল্লাহ্‌ তাআলা বলেন: "তিনি চান তোমরা সংখ্যা পূরণ কর এবং তিনি যে তোমাদেরকে নির্দেশনা দিয়েছেন সে জন্য তাকবীর উচ্চারণ কর।"

আমি কুরআনের জ্ঞানের ব্যাপারে যে আলেমের প্রতি সন্তুষ্ট তার থেকে শুনেছি যে, তিনি বলেন: তোমরা সংখ্যা পূরণ কর অর্থাৎ রমযান মাসের রোযার সংখ্যা। তিনি যে তোমাদেরকে নির্দেশনা দিয়েছেন সে জন্য তাকবীর উচ্চারণ কর। অর্থাৎ মাস পূর্ণ করার সময় তিনি যে তোমাদেরকে নির্দেশনা দিয়েছেন সে জন্য তাঁর বড়ত্বের ঘোষণা দাও। মাস পূর্ণ করা হচ্ছে- রমযান মাসের সর্বশেষ দিনের সূর্য অস্ত যাওয়া।

এরপর শাফেয়ি বলেন:

যখন লোকেরা শাওয়ালের চাঁদ দেখবে তখন আমি পছন্দ করি যে, তারা দলবদ্ধভাবে ও আলাদা আলাদাভাবে মসজিদে, বাজারে, রাস্তাঘাটে, বাড়ীঘরে, সফররত অবস্থায়, মুকীম অবস্থায়, সর্বাবস্থায়, যেখানেই থাকুক না কেন তাকবীর দিবে। এবং উচ্চস্বরে তাকবীর দিবে। এভাবে তারা প্রত্যুষে ঈদগাহে আসা পর্যন্ত তাকবীর দিতে থাকবে। এমনকি প্রত্যুষের পর ইমাম নামায পড়াতে আসা পর্যন্ত তাকবীর দিতে থাকবে। এরপর তারা তাকবীর বন্ধ করবে।

এরপর তিনি সাঈদ বিন মুসায়্যিব, উরওয়া বিন যুবাইর, আবু সালাম, আবু বাকর বিন আব্দুর রহমান থেকে বর্ণনা করেন যে, তারা ঈদুল ফিতরের রাতে মসজিদে উচ্চস্বরে তাকবীর দিতেন।

উরওয়া বিন যুবাইর ও আবু সালাম বিন আব্দুর রহমান থেকে এটাও বর্ণিত আছে যে, তারা দুইজন যখন ঈদগাহে যেতেন তখনও তারা উচ্চস্বরে তাকবীর দিতেন।

নাফে বিন জুবাইর থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি যখন ঈদের দিন সকাল বেলা ঈদগাহে যেতেন তখন উচ্চস্বরে তাকবীর দিতেন।

ইবনে উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি যখন ঈদের দিন সকাল বেলা সূর্যোদয়ের সময় ঈদগাহে যেতেন তখন তাকবীর দিতেন; যতক্ষণ না ঈদগাহে পৌঁছেন। এরপর ঈদগাহেও তাকবীর দিতে থাকতেন যখন পর্যন্ত না ইমাম আসন গ্রহণ করেন। তখন তাকবীর ছেড়ে দিতেন।[সংক্ষেপিত ও সমাপ্ত]

www.atowar-rahman-salafi.blogspot.com

Comments

|| Popular Posts ||

বিষয়__ জাহান্নামের স্তরসমূহ এবং শাস্তি _ গ্রন্থঃ জান্নাত-জাহান্নাম

Moving the finger during Tashahhud _ Important Masala-Masael,

Question:What is the correct explanation for the Prophet's saying: "The one who knows the most Qur'aan should lead the people in prayer…"? _ Fatwa collection

আল-ইতিছাম pdf download _ al itisham

The Prophet warns his kindred of idolatry....

The Story of Qarun(Korah)

টাখনুর নীচে কাপড় পরিধানের শাস্তি :

Why Allah sent Prophets and Messengers ? – Muhsin Khan & Hilaali