Posts

Showing posts from 2024

ছবি-মূর্তির ভয়াবহতা :

  ভূমিকা:  ছবি, প্রতিকৃতি ও মূর্তি একটি অপরটির সাথে জড়িত। ইসলাম এগুলোর ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দিয়েছে। বর্তমানে বিভিন্ন নাম ও মোড়কে মূর্তিপূজার নিত্যনতুন পদ্ধতি চালু হয়েছে। মূর্তিপূজাকে উৎসাহিত করে এমন সকল বিষয়কে ইসলাম কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করেছে। বক্ষ্যমাণ প্রবন্ধে ছবি-মূর্তি সম্পর্কে সংক্ষিপ্তাকারে আলোকপাত করার চেষ্টা করব, ইনশা-আল্লাহ। মূর্তিপূজার প্রচলন:  আদম ও নূহ আলাইহিমাস সালাম-এর মধ্যবর্তী দশ যুগ বা প্রজন্ম পর্যন্ত সবাই ইসলামের ওপর প্রতিষ্ঠিত ছিল। [1]  নূহ আলাইহিস সালাম-এর জাতির মধ্যে সর্বপ্রথম প্রতিমা বা মূর্তিপূজার প্রচলন শুরু হয়। [2]  জাহিলিয়াতের যুগে যে সমস্ত গায়রুল্লাহর ইবাদত বা পূজা চালু ছিল, তা ছিল মূর্তি, ভাস্কর্য ও ছবিকেন্দ্রিক। আর ঐ সমস্ত মূর্তি ও ভাস্কর্য ছিল সেই সময়ের সর্বোত্তম নেককার ব্যক্তিবর্গের। যেমন- মহান আল্লাহ বলেন,وَقَالُوا لَا تَذَرُنَّ آلِهَتَكُمْ وَلَا تَذَرُنَّ وَدًّا وَلَا سُوَاعًا وَلَا يَغُوثَ وَيَعُوقَ وَنَسْرًا - وَقَدْ أَضَلُّوا كَثِيرًا ‘আর তারা (নূহ আলাইহিস সালাম-এর জাতির নেতারা) বলত, তোমরা কোনো অবস্থাতেই তোমাদের উপাস্য...

Fatwa বিবাহ ও তালাক

  প্রশ্ন (৩৫/৪৩৫) : ওলী ছাড়াই এক মেয়ের বিবাহ হয়েছে। বিবাহের এক মাস পর মেয়ের অভিভাবক মৌখিক সম্মতি প্রদান করেন। পরবর্তীতে ছেলে তিনবারে মেয়েকে তিন তালাক প্রদান করেছে। এক্ষণে প্রশ্ন হল, ওলী ব্যতীত বিবাহ বৈধ হয়েছে কি? বিবাহ শুদ্ধ করার জন্য অভিভাবকের মৌন বা মৌখিক সম্মতিই কি যথেষ্ট? নাকি পুনরায় ঈজাব-কবুল আবশ্যক? উক্ত তালাক কি কার্যকর হয়েছে? মেয়েকে পুনরায় বিবাহের মাধ্যমে গ্রহণ করা যাবে কি?  উত্তর : উক্ত বিবাহ সিদ্ধ হয়নি। কারণ রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, যে নারী অভিভাবক ছাড়া বিয়ে করল তার বিয়ে বাতিল, বাতিল, বাতিল (তিরমিযী হা/১১০২; আবুদাঊদ হা/২০৮৩; মিশকাত হা/৩১৩১)। যেখানে বিয়েই হয়নি সেখানে মৌখিক বা লিখিত সম্মতিতে বৈধতার কোন প্রশ্নই আসে না। অতএব অভিভাবক কর্তৃক সম্মতি দানের পর পুনরায় সুন্নাতী তরীকার নতুন করে বিয়ে করাতে হ’ত। কিন্তু সেটাও করা হয়নি। তাই ছেলে কর্তৃক তালাক দেয়া অর্থহীন। কারণ তাদের বিয়েই হয়নি। তারা ব্যভিচারী। এমতাবস্থায় প্রথমতঃ তাদের কৃতকর্মের জন্য তওবা করতে হবে (যেহেতু ইসলামী শরী‘আতের শাস্তির বিধান আমাদের সমাজে নেই)। দ্বিতীয়তঃ অভিভাবকের সম্মতিতে পুনরায় বিয়ে করতে পারে। কারণ রাসূলু...

ইউনুস (আঃ)-এর কওম :----

হযরত ইউনুস বিন মাত্তা (আঃ)-এর কথা পবিত্র কুরআনের মোট ৬টি সূরার ১৮টি আয়াতে[1] বর্ণিত হয়েছে। সূরা ইউনুস ৯৮ আয়াতে তাঁর নাম ইউনুস, সূরা আম্বিয়া ৮৭ আয়াতে ‘যুন-নূন’ (ذو النون) এবং সূরা ক্বলম ৪৮ আয়াতে তাঁকে ‘ছাহেবুল হূত’ (صاحب الحوت) বলা হয়েছে। ‘নূন’ ও ‘হূত’ উভয়ের অর্থ মাছ। যুন-নূন ও ছাহেবুল হূত অর্থ মাছওয়ালা। একটি বিশেষ ঘটনার প্রেক্ষিতে তিনি উক্ত নামে পরিচিত হন। সামনে তা বিবৃত হবে। ইউনুস (আঃ)-এর কওম : ইউনুস (আঃ) বর্তমান ইরাকের মূছেল নগরীর নিকটবর্তী ‘নীনাওয়া’ (نينوى) জনপদের অধিবাসীদের প্রতি প্রেরিত হন। তিনি তাদেরকে তাওহীদের দাওয়াত দেন এবং ঈমান ও সৎকর্মের প্রতি আহবান জানান। কিন্তু তারা তাঁর প্রতি অবাধ্যতা প্রদর্শন করে। বারবার দাওয়াত দিয়ে প্রত্যাখ্যাত হ’লে আল্লাহর হুকুমে তিনি এলাকা ত্যাগ করে চলে যান। ইতিমধ্যে তার কওমের উপরে আযাব নাযিল হওয়ার পূর্বাভাস দেখা দিল। জনপদ ত্যাগ করার সময় তিনি বলে গিয়েছিলেন যে, তিনদিন পর সেখানে গযব নাযিল হ’তে পারে। তারা ভাবল, নবী কখনো মিথ্যা বলেন না। ফলে ইউনুসের কওম ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে দ্রুত কুফর ও শিরক হ’তে তওবা করে এবং জনপদের সকল আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা এবং গবাদিপশু সব নিয়ে জঙ...

তামাত্তু হজ্জ : Hajj e tamattu bangla

শাওয়াল, যিলকদ ও জিলহজ্জ এ তিনটি হল হজ্জের মাস। হজ্জের মাসসমূহে পৃথকভাবে প্রথমে উমরা ও পরে হজ্জ আদায় করাকে তামাত্তু হজ্জ বলে। অর্থাৎ ১ লা শাওয়াল থেকে উকুফে আরাফার পূর্বে (৯ জিলহজ্জ), যেকোনো মুহূর্তে উমরা আদায় করে হালাল হয়ে যাওয়া ও উকুফে আরাফার পূর্বে নতুন করে হজ্জের এহরাম বাঁধা। এবং হজ্জের যাবতীয় কার্যক্রম সম্পাদন করা। যারা হাদী সঙ্গে করে মক্কায় গমন করে না—বর্তমানে বহিরাগত হাজিদের কেউই হাদীর পশু সঙ্গে নিয়ে আসে না—তাদের জন্য তামাত্তু হজ্জই উত্তম। কারও কারও মতে সর্বাবস্থায় তামাত্তু হজ্জ উত্তম। কেননা রাসূলুল্লাহ (ﷺ)বিদায় হজ্জের সময় তাঁর সঙ্গে থাকা সাহাবাদের মধ্যে যারা হাদীর জন্তু সঙ্গে নিয়ে আসেননি তাদের সবাইকে তামাত্তু করার পরামর্শ দিয়েছেন, এবং নিজেও এই বলে কামনা ব্যক্ত করেছেন যে, যদি এ বিষয়টি পূর্বে প্রতীয়মান হত তাহলে হাদীর জন্তু সঙ্গে আনতাম না, আর যদি হাদী আমার সাথে না থাকত, তবে হালাল হয়ে যেতাম।[1] তামাত্তু হজ্জ তিনভাবে আদায় করা যায় ক) মীকাত থেকে উমরার জন্য এহরাম বেঁধে মক্কায় গিয়ে তাওয়াফ সাঈ করে মাথার চুল হলক অথবা কসর করে হালাল হয়ে যাওয়া ও হজ্জ পর্যন্ত মক্কাতেই অবস্থান করা। ৮ জিলহজ্জ নতু...

গর্ভাবস্থায় বমি :

  প্রতি ১০ জন গর্ভবতী নারীর মধ্যে ৮ জনেরই গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব বা বমি হয় অথবা একসাথে দুটিই হয়। এটাকে অনেক সময় ‘মর্নিং সিকনেস’ বলা হয়ে থাকে। যদিও এটি যে কেবল সকালেই হবে, এমন কোন ব্যাপার নেই। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ১৬ থেকে ২০ সপ্তাহের মধ্যে এই সমস্যাগুলো কমে যায় বা একেবারে চলে যায়, তবে কেউ কেউ আরও বেশিদিন ধরে এই সমস্যায় ভুগতে পারেন। অনেকের এত বেশি বমি হয় যে, তারা যেসব খাবার খান, এমনকি যা পান করেন তাই বমি করে বের ফেলেন, ফলে তাদের স্বাভাবিক জীবনযাপন মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ।  এই অতিরিক্ত বমি ভাব ও বমি হওয়াকে বলা হয় হাইপারএমেসিস গ্র্যাভিডেরাম (Hyperemesis Gravidarum) এবং এমন হলে অনেকেরই হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে। ঘনঘন বমি হওয়ার কারণে পেটে একেবারেই খাবার রাখতে না পারলে , ডাক্তারের সাথে বা নিকটস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের স্বাস্থ্যকর্মীর সাথে দ্রুত যোগাযোগ করুন অথবা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব হাসপাতালে যান। অতিরিক্ত বমি হলে পানিশূন্যতা হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়, তাই দ্রুত সঠিক চিকিৎসা নেওয়া প্রয়োজন।  হাইপারএমেসিস গ্র্যাভিডেরাম এর লক্ষণ গর্ভাবস্থার সাধারণ বমি ভাব বা বমির তুলনায় হাইপ...

🌀৭ মাস শিশুর দৈনিক আদর্শ খাবার তালিকা🌀 : Baby Food Charts

🛑সকাল ৭ :০০ঃ ঘুম থেকে উঠে ( বুকের দুধ /ফর্মুলা মিল্ক) 🛑সকালের নাস্তা ৮:০০ঃ ওটস কলা /ওটস কলার পরিজি/রাগী পরিজি /আপেল পরিজি /মিষ্টি আলু ম্যাশ করা / চালের সিরিয়াল/গাজর সুজি পরিজি /মিষ্টি কুমড়া ওটসের পরিজি/বিটের ওটসের পরিজি/ কলা ম্যাশ করা /বিটরুট + আলু পিউরি/ব্রাউন রাইচ পরিজি/গাজর ওটস পরিজি/গাজর পরিজি /আম ম্যাশ 🛑সকাল ৯:০০ঃ বুকের দুধ/ ফর্মুলা মিল্ক  🛑সকাল ৯:৩০ঃ এক ঘন্টা ঘুমানো   🛑সকাল ১০:৩০-১১:০০টাঃ ঘুম থেকে জেগে উাঠানো ( বুকের দুধ/ফর্মুলা মিল্ক)গোসল 🛑দুপুরের খাবার ১২:৩০ঃ মুগ ডাল + ভাত ম্যাশ করা/ ডিমের কুসুম + ভাত ম্যাশ করা / মিষ্টি কুমড়া + মসুর ডাল খিচুড়ি /পালংশাক খিচুড়ি / আপেল পরিজি /গাজর পরিজি/ ডালের সুপ /মটরশুঁটি +আলু খিচুড়ি /গাজর খিচুড়ি / পেপে পিউরি / চাল+ ডাল খিচুড়ি / চিকেন সিদ্ধ  🛑দুপুর ২:০০টায়ঃ ঘুম ( ২/৩ ঘন্টার জন্য ঘুম 🛑বিকাল টায় ৪:০০টায়ঃ বাহিরে ঘুরতে যাওয়া ( বুকের দুধ /ফর্মুলা মিল্ক) 🛑রাতের খাবার  ৬:০০-৭:০০ টায়ঃ 🛑রাত ৮:০০-৯:০০ টায় : ঘুম পরানো ( বুকের দুধ/ ফর্মুলা মিল্ক)  🛑৯ -১০ টায় : লাউ + ভাত ম্...

ঈদের মাসায়েল...

ভূমিকা: ‘ঈদ’ (عيد) শব্দটি আরবী, যা ‘আউদুন’ (عود) মাছদার থেকে এসেছে। এর আভিধানিক অর্থ হলো— উৎসব, পর্ব, ঋতু, মৌসুম,[1] প্রত্যাবর্তন, প্রত্যাগমন[2] ইত্যাদি। প্রতি বছর ঘুরে ঘুরে আসে বলে একে ‘ঈদ’ বলা হয়।[3] ২য় হিজরী সনে ছিয়াম ফরয হওয়ার সাথে সাথে ‘ঈদুল ফিত্বর’-এর সূচনা হয়।[4] রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদীনায় হিজরত করার পরে দেখলেন যে, মদীনাবাসী বছরে দু’দিন খেলাধুলা ও আনন্দ-উৎসব করে। তখন তিনি তাদেরকে উক্ত দু’দিন উৎসব পালন করতে নিষেধ করেন এবং ‘ঈদুল ফিত্বর’ ও ‘ঈদুল আযহা’-কে মুসলিমদের জন্য আনন্দের দিন নির্ধারণ করেন। তিনি বলেন,قَدْ أَبْدَلَكُمُ اللهُ بِهِمَا خَيْرًا مِنْهَا يَوْمُ الْأَضْحَى وَيَوْمُ الْفِطْرِ ‘আল্লাহ তোমাদের জন্য ঐ দু’দিনের পরিবর্তে দু’টি মহান উৎসবের দিন প্রদান করেছেন— ‘ঈদুল আযহা’ ও ‘ঈদুল ফিত্বর’।[5] ঈদের ছালাতের আগে করণীয়: (১) ছাদাক্বাতুল ফিত্বর বা ফিত্বরা আদায় করতে হবে ঈদগাহে বের হওয়ার আগেই। ছোট-বড়, নারী-পুরুষ, স্বাধীন-পরাধীন প্রত্যেক মুসলিম ব্যক্তির পক্ষ থেকে এক ছা‘ (প্রায় ২.৫০ কেজি) পরিমাণ খাদ্যদ্রব্য ফিত্বরা হিসাবে আদায় করা ফরয।[6] উল্লেখ্য, ঈদুল...